বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
আরিফ হাসানঃ একটা সংসারে পরিবারের বড় ছেলে হওয়াটা আসলে অনেক বড় একটা অপরাধের ন্যায়, আর সেই সংসারটা যদি হয় একটা মধ্যবিত্ত পরিবার তাহলে তো আরো মারত্মক। আসলে বড় হয়ে জন্ম নেওয়াটা নিজের উপর নির্ভর করে না, এটা সম্পূর্ণ সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তাই একে অপরাধ বলাটা ঠিক হবে, তবে আমি বলতে চাই এটা অনেক বেশী কষ্টের বা চ্যালেঞ্জিং। সত্যিকার অর্থেই পরিবারে একটা বড় ছেলে হয়ে আসার পিছনের অনেক বেশি কষ্ট লুকিয়ে থাকে। হয়তো বা আমার কাছে যেগুলো কষ্টকর মনে হবে অন্যের কাছে সেগুলোর ব্যাখ্যা অর্থহীন। কিন্তু আমার কাছে অনেক ছোট ছোট বিষয় গুলোও অনেক বেশি অনুভুতি নিয়ে খেলা করে।
ঘরের বড় সন্তান হিসাবে সবসময় সব বিষয়ে নিজের স্বার্থটায় ছাড় দেওয়া লাগে, প্রথমে ছোটদের কথা বিবেচনা করে পরে নিজেরটা ভাবতে হয়। হ্যাঁ এটা অনেক সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু অনেক সময় নিজের এই প্রাপ্তি আর অপূর্ণতার খেলার ছলে নিজের স্বপ্ন গুলোই অপূর্ণ থেকে যায়। আর কোন এক সময় সেই স্বপ্ন গুলো মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়, হারিয়ে যায় শুধুমাত্র কল্পনার জগতে। বাবা-মার প্রথম সন্তান হিসাবে সব সময় নিজের উপর একটা বাড়তি চাপ থাকে, হয়তো কারো উপর সেটা পারিবারিক ভাবে কারো বা আবার নিজের মানসিকতা থেকে সৃষ্ট। সবসময় নিজেকে আড়াল করে রাখতে হয় অন্যদের থেকে, নিজের সম্পর্কে কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবে না এরকম মনভাব নিয়ে।
আসলে সত্যি বলতে কেউ বুঝার চেষ্টাটাও করে না, কারণ সবার কাছে একটাই মনভাব… সে তো সবার বড় নিজেরটা নিজেই পোষিয়ে নিবে, সবার বড় তো একটু বুঝতে হবে… এরকম টাইপ।
কিন্তু এই উত্তাল ঢেউয়ের সাতার কেটে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত, আমাকে কেউ কখনো দেখতে চায় না, কেউ কখনো আমাকে বুঝতে চাই না, বুজতে চাইনা আমার জীবনের লক্ষটা কি!
একটু অতিরিক্ত চাপ প্রতিনিয়ত সহ্য করে যাচ্ছি, মাঝেমাঝে আমার সহ্য সীমা অতিক্রম করে কিন্তু এরপরেও আমাকে নিরব থাকতে হয়, আমার জন্য না বরং আমার পরিবারের জন্য নিরব থাকতে হয়। সারাজীবনই চেয়েছি আমার মায়ের চোখে প্রিন্স হয়ে থাকতে আর সে অনুযায়ী প্রচেষ্টা করি, হাজার দু:খেও অসুস্থ মায়ের সামনে সুখের অভিনয় করে চলি কিন্তু চারপাশের কিছু আপনরূপী মানুষজন আমাকে নিয়ে মায়ের মনটাকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলে, অসুস্থ মা তখন আর অসুস্থ হয়ে পরে। মাঝেমধ্যে তাদেরচোখে অঙুল দেখিয়ে বলতে ইচ্ছা হয়; যেদিন পিতাহারা হয়েছিলাম কোথায় ছিল আপনাদের এই দরদী মন? সবকিছু ভুলে আপনাদের বিপদে ঝাঁপিয়ে পরেছি নি:স্বার্থে। জীবন যুদ্ধে ওয়ান ম্যান আর্মি হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি নিজের, পরিবারের, আপনাদের মত আপন জনদের এবং সমাজের। আল্লাহ ছাড়া সেদিন কারো মুখাপেক্ষী হয়নি আজও হব না, ভালই আছি আল্লাহর রহমতে, ইনশাল্লাহ ভালো থাকবো।